দিন দিন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যেভাবে বাড়ছে তাতে এই সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে জরুরি ভিত্তিতে কিছু একটা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। করোনাভাইরাসের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল শনিবার ‘বিয়ন্ড দ্য প্যানডেমিক’ এর পঞ্চম পর্ব ‘করোনা সংকটকালে স্বাস্থ্যসেবা’ শিরোনামে আওয়ামী লীগ আয়োজিত অনলাইন আলোচনা সভায় যোগ দিয়ে মন্ত্রী একথা বলেন।
লোকজনের স্থান বদলের সঙ্গে সঙ্গে সংক্রমণও বাড়ছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যদি দেখি, আক্রান্তদের ৮০ ভাগ হলো ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামের। ল্যান্ডমাস বিবেচনা করলে কিন্তু ৫০ পারসেন্ট আক্রান্ত হয় নাই। কিন্তু আমরা দেখছি, গার্মেন্ট বা ঈদযাত্রায় মুভমেন্ট বাড়লে আক্রান্ত বেড়ে যাচ্ছে। মুভমেন্ট কমিয়ে দিলে আক্রান্ত কমে যাচ্ছে।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘একটা কিছু ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। আমাদের পরামর্শক কমিটি রয়েছে, আমাদের জাতীয় কমিটিতেও বেশ কিছু মন্ত্রণালয় রয়েছে। তাদের সবার প্রোপজাল অনুযায়ী কাজ করলে ভালো হবে মনে করি। আমরা ফরম্যাটিভ স্টেজে আছি, তাই কিছু বলছি না। তবে আমাদের সায়েন্টিফিক্যালি, প্ল্যান মাফিক বেরিয়ে আসতে হবে।’
ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের পর অন্যান্য জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে তার প্রভাব কৃষিতে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আক্রান্তের সংখ্যা যদি কম রাখতে না পারি তাহলে কিন্তু অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে। এখন আমাদের কৃষি খুব ভালো আছে। তবে আক্রান্তের সংখ্যা যদি অন্য জেলায় বাড়তে থাকে তাহলে কৃষি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাহলে সেটা হয়ে যাবে মারাত্মক। এখানে খাওয়া-দাওয়ার অভাব দেখা দেবে।’
শনিবার পর্যন্ত দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৬৩ হাজার ২৬ জনে পৌঁছেছে। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ পড়বে বলেও সতর্ক করে দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘গার্মেন্ট আসলো, ঈদ আসলো, বাজার করল, ঈদে যাওয়া-আসা করল। এক লাফে ৫০ হাজার হয়ে গেল। সব সময় বলছি, সংক্রমণের চেইনটা যদি কাট করতে না পারি তাহলে সেটা কিন্তু বন্ধ হবে না। এভাবে চলতে থাকলে আরও ৬০-৭০ হাজার নতুন অ্যাড হয়ে যাবে। তখন কোনো হাসপাতালে আমরা জায়গা দিতে পারব না। কারণ এত রোগী এসে যাবে তাদের ১০ পারসেন্টেরও যদি হসপিটালাইজেশন লাগে তাহলে পরে আপনারা দেখেন ৭০-৮০ হাজার লোকের আবার নতুন করে জায়গা দিতে হবে। আমাদের সে জায়গা আছে কি? এটা হলো দেখার বিষয়।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রতিটি জেলার খবর আমার কাছে আছে। বাড়ছে কীভাবে সব সময় দেখেছি। যখনই লোক গেছে ওখানে সংক্রমিত করে তারা ঢাকায় চলে আসলো।’
এ ছাড়া করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে যদি কোনো বেসরকারি হাসপাতাল রোগীদের সেবা দিতে না চায় তাহলে ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে বিধিবিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও অনুষ্ঠানে হুঁশিয়ারি দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।